
পাপ্পার কাণ্ড: বিএনপির সাইনবোর্ডের অপব্যবহার?
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাইনবোর্ড তার বিএনপি’র । চলনে-বলনে আওয়ামী লীগ। সখ্যতা সম্রাট বাহিনীর সঙ্গে। তিনি সম্রাট বাহিনীর সাঙ্গপাঙ্গদের সঙ্গে নিয়ে রাত নামলেই হাজির হন রাজধানীর অভিজাত হোটেলের বারে বারে। সেখানে কখনো দলীয় পরিচয় ভাঙিয়ে আবার কখনো আওয়ামী লীগের গুন্ডা সম্রাটের সাঙ্গপাঙ্গদের ভয় দেখিয়ে করে বেড়াচ্ছেন চাঁদাবাজি। হোটেলের বারে ঢুকলেই বার টেন্ডার থেকে শুরু করে হোটেল কর্তৃপক্ষ, সিঙ্গার সবাই তার শারিরীক-মানসিক অত্যাচারে অতিষ্ট।
নাম তার পাপ্পা শিকদার। পদবী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক। কাজ হচ্ছে দলীয় পদ-পদবী ব্যবহার করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের সাঙ্গ-পাঙ্গদের সাথে নিয়ে রাত ০৮ থেকে শুরু ভোর রাত পর্যন্ত হোটেল পূর্বানী, রাজমনি ঈশা খা, হোটেল ফারস, হোটেল ৭১ সহ ঢাকা শহরের বারে ঘুরে ঘুরে ফ্রিতে মদ খাওয়া ও উশৃঙ্খলতা উসকে দেয়া। সেই সাথে রয়েছে বার এ কাজ করে এরকম মেয়েদেরকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে টাকা না দেয়ার অভিযোগ ।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের সাঙ্গোপাঙ্গদের সঙ্গে নিয়ে রাতে মহাপড়ায় বের হওয়া শুরু করেন । প্রথম ধাপে অভিজাত হোটেলের বারে ফ্রিতে মদ পান, অতঃপর পাড়ে গান করা মেয়েদের যখন যাকে ইচ্ছা তাকে তুলে নিয়ে সঙ্গ নিতে বাধ্য করেন। কারো ইচ্ছা থাকুক বা নাই থাকুক তার অসম্মতিতে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া রোজকার নামচা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বলা যায় এখন পাপ্পা শিকদারের এটা এখন বড় নেশা।
এছাড়াও অভিযোগ আছে আগে তার চাহিদা পূরণ করতে হবে। পরে টাকা পরিষদ না করে হুমকি দেখায় সম্রাটের লোকজনকে সাথে নিয়ে। সূত্র মতে, পাপ্পা শিকদার গড়ে তুলতে যাচ্ছেন নব্যবাহিনী । রাজমনি ইসা খাঁ, পূরবানী, ফাসর্, হোটেল ৭১ সহ বিভিন্ন বারে রীতিমত হানা দেন তিনি। টার্গেট বারগুলো থেকে টাকা তুলে সাঙ্গপাঙ্গদের চাহিদা মেটানো হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বারের এক সিঙ্গার জানালেন তারা বড় অসহায় । বারে গান করেন এ লজ্জায় তারা কারো কাছে অভিযোগ করতে পারেন না। বাপ্পা তাদের ভোগ করে কোন প্রকার টাকা বা বকশিশ বা পেমেন্ট না দিয়ে চলে যান। নিজেকে আজকাল বারের রাজা মনে করেন পাপ্পা শিকদার।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক বারের সমন্বয়ক এই প্রতিবেদককে অভিযোগ করেন সবার ব্যবসায় কিছু না কিছু ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে বারেও মাঝেমধ্যে কিছুটা অনিয়ম হয়ে থাকে। সংশ্লিষ্ট মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেসব মনিটর করে। কিন্তু পাপ্পুদের অত্যাচারের কথা কাউকে বলা যায় না । তার ব্যবহারে মনে হয় পুলিশ, এনএসআই, ডিজিএফআই যেন তার হাতের পুতুল। তাকে কিছু বলতে গেলে আরো উল্টো হুমকি দেন। বলে শীর্ষ কর্মকর্তারা তারই বন্ধু-বান্ধব। যখন তখন ব্যবসা বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেন পাপ্পা শিকদার । তার সঙ্গে থাকে সম্রাটের গুন্ডা পান্ডারা । পাপ্পা শিকদার বড় গড়ায় বলেন দেশের রাজনীতিতে থাকবে আওয়ামী লীগ, থাকবে বিএনপি , বাকী সব নো আওয়াজ। তিনি বলেন রাতের বেলায় আওয়ামী লীগ – বিএনপি ভাই ভাই। তাই তিনি সম্রাটের লোকজন নিয়ে ঘোরাফেরা করেন।
দিনের পর দিন এই অবস্থা চলে আসায় কয়েকটি বারের ব্যবসায় ধস নেমেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কারণ তার দলবল নিয়ে যেখানে অবস্থান করে সেখানে কোন ভদ্রলোক বসতে চান না। তার ফ্যাসিস্ট আচরণে দেখা যায় চরম বিশৃঙ্খলা, বিকৃত হয় পরিবেশ। মেয়েরা থাকে আতঙ্কে। এসব অভিযোগ করার সাহস বার কর্তৃপক্ষের নেই । ফলে তাদের নিরবে সহ্য করে যেতে হচ্ছে।
সূত্র মতে, নিয়মিত মাসোহারা ওঠায় তারেক রহমানের সাবেক পিএস মিয়া নুর উদ্দিন অপুর নাম ব্যবহার করেন। এমন রেকর্ডিং এই প্রতিবেদকের এর হাতে এসেছে। এছাড়া সম্রাটের লোকজনকে সাথে নিয়ে মাতাল হয়ে অনেক বিএনপি নেতার নাম তুলে অশ্রাব্য গালি দেন পাপ্পা শিকদার।
এমন অবস্থা চলতে থাকায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছেন পাপ্পা শিকদার। সূত্র জানায় দলের একটি পদ ধারণ করায় এবং ওখানে সেখানে দলীয় নাম পরিচয় ভাঙ্গানোর কারণে বিএনপি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিএনপি’র জনপ্রিয়তা এবং ভবিষ্যৎ আলোর দ্বারপ্রান্তে কিন্তু পাপ্পার মতো নেতা-কর্মীরা যদি এসব জায়গায় এসে দলীয় নাম পরিচয় ব্যবহার করে চাঁদাবাজি ও জোর করে ফাও মদ্যপান এবং নারীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে বেড়ান তাহলে বিপুল সম্ভাবনাময়ী বিএনপি ইমেজ সংকটে পড়বে।